বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষায় বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করছে মানুষ। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানহীন, নকল সুরক্ষা সামগ্রী তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। রাজধানীর রাস্তায়- অলিগলিতে বিক্রি হচ্ছে এসব অনিরাপদ মাস্ক ও নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এছাড়া ফুটপাতে সস্তায় বিক্রি হচ্ছে মানহীন পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই)।
শনিবার রাজধানীর ধানমণ্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, কারওয়ান বাজার, মৌচাক, পল্টন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। নগরীর ফুটপাত থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার গলিতে বিক্রি হচ্ছে নানা প্রতিষ্ঠানের তৈরি মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, পিপিই, গাউন, সার্জিক্যাল টুপি।
নগরীর রায়েরবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কাঁচাবাজারের গলিতে ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নামের নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যার মোড়ক দেখতে হুবহু স্যাভলন, হেক্সিসল বা ডেটলের মতোই। নামের বানানেও রয়েছে সাদৃশ্য।
এছাড়া বিক্রি হওয়া বিভিন্ন রঙের পিপিইর অধিকাংশই মানহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, এসব পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম মোটেও সুরক্ষা দিতে পারছে না।
তবে সাধারণ মানুষ পিপিই কম পরলেও মাস্ক পরেই প্রতিদিনের কাজ করছেন। আর মানুষের এই দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এন-নাইনটি ফাইভ নামের মাস্কের কথা বলে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে এফএফসি১ এস মাস্ক। মাস্কগুলো এন-৯৫ না হলেও সেগুলোর গায়ে এন-৯৫ সিল লাগিয়ে দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
এমনই এক বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, করোনাকালে পেশা বদলে এই ব্যবসা শুরু করেছেন। এর আগে তিনি বাচ্চাদের খেলনা বিক্রি করতেন। মেন রোডে পুলিশের ঝামেলা তাই কাঁচাবাজারেই পসরা মেলে বসেছেন। এই পণ্যের মান সম্পর্কে তার দাবি ‘শতভাগ সার্জিক্যাল’ এবং এখন পর্যন্ত কেউ এসব বিক্রিতে বাধা দেয়নি।
কাঁচাবাজারের মতোই এসব পণ্য দেখা যায় রাজধানীর ফুটপাতে ও গলির দোকানে। দোকানগুলোতে করোনা সুরক্ষা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে- কয়েক ধরনের মাস্ক, গাউন, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার ও চিকিৎসকদের মাথায় সার্জিক্যাল টুপি। গাউনের প্যাকেটে রয়েছে একজোড়া হ্যান্ড গ্লাভস, যার দাম ২৫০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। আর আলাদা করে হ্যান্ড গ্লাভস বিক্রি হচ্ছে প্রতি জোড়া ২৫-৩০ টাকায়।
মাথায় পরার টুপি ১০ টাকা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পরিমাণ অনুযায়ী ৪০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতের এসব দোকানিরা খুচরা ও পাইকারি দুই ধরনের ক্রেতার কাছেই পণ্য বিক্রি করছেন।
কোতোয়ালি জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল আলম মুজাহিদ বলেন, আমরা এসবের মূল উৎস উৎপাটন শুরু করেছি। বিভিন্ন অবৈধ স্যানিটাইজার, মাস্কসহ অনুমোদনহীন সার্জিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়াও ফুটপাতে এ ধরনের পণ্য বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ চলে গেল আবার বসে। এ জন্য টহল বাড়ানো হয়েছে। সেইসঙ্গে এ বিষয়ে জনগণকেও সচেতন করার কাজ অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply